ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিমদের আপত্তি সমূহের জবাব প্রিন্ট কর ইমেল
লিখেছেন ডঃ জাকির আবদুল করিম নায়েক   
Monday, 29 September 2008
আর্টিকেল সূচি
ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিমদের আপত্তি সমূহের জবাব
বহু বিবাহ প্রথা

অনুবাদিকার কথা

‘ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিমদের আপত্তিসমূহের জবাব, বইটি ‘Answers to non muslims’common questions about Islam’- এর বাংলা অনুবাদ। বইয়ের লেখক ডাঃ জাকির আবদুল করিম নায়েক একজন চিকিৎসক ও বর্তমান বিশ্বের একজন বড় দা’য়ী। তিনি ভারতের নাগরিক ও মোম্বাই ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ফাউণ্ডেশনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইসলামের দাওয়াত চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি তুলনামূলক ধর্মতত্ব বিশেষজ্ঞ। কোরআন ও বাইবেল সহ হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ সমূহের উপর তার অতুলনীয় দখল, যেন তিনি এগুলোর হাফেজ। ইসলামের প্রচার প্রসারের জন্য তিনি একটি টি.ভি. চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি একজন সেরা বক্তা। কোরআন, হাদীস, বাইবেল ও হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ থেকে কম্পিউটারের মত উপস্থিত উদ্ধৃতি দিতে সহ্মম, তিনি অমুসলিমদের জন্য উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তরের ব্যবস্থা করেন এবং বিজ্ঞান সম্মত অপ্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তিতর্ক পেশ করেন। তিনি ইসলামের বিধি-নিষেধকে এমন অপ্রতিহত যুক্তি প্রমাণ সহকারে পেশ করেন।তিনি ইসলামের বিধি নিষেধকে এমন অপ্রতিহত যুক্তি প্রমাণ পেশ করেন যা অমুসলিমদেরকে ইসলাম সর্ম্পকে নতুন করে চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করে। যেমন, মদের অপকারিতা এমনভাবে তুলে ধরেন যে, ইসলামের এই বিধিটি কোন অমুসলিম সমাজে বাস্তবায়িত হলে, তারাও মুসলমানদের মত সমান ভাবে উপকৃত হবে। মোট কথা, ডাঃ জাকির ইসলামের বিশ্বজনীনতা ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে সহ্মম। তাঁর যোগ্যতা সম্পর্কে তুলনামূলক ধর্মশাস্ত্র বিশেষজ্ঞ মরহুম আহমদ দীদাত বলে গেছেন, ডাঃ জাকির হলেন, দীদতা Plus। অর্থাৎ দীদাত অপেহ্মা আরো অধিক যোগ্যতার অধিকারী। আলোচ্য বইতে ডাঃ জাকিরের প্রশ্নোত্তর দ্বারা সেই ধারণা পাওয়া যাবে। তাঁর বইটি অমুসলিমদের চিন্তার মোড় পরিবর্তনে সহায়ক হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। অনুবাদিকা নাবিলা মাকারেমুল ইসলম à§©à§Ÿ বর্ষ ডেন্টাল সার্জারী, সিটি ডেন্টাল কলেজ, ঢাকা।

লেখকের ভূমিকা

দাওয়াতে দীন ফরজঃ অধিকাংশ মুসলিমই জানে যে, ইসলাম বিশ্বজনীন দ্বীন যা গোটা মানব জাতির উদ্দেশ্যে এসেছে, আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা সমগ্র বিশ্বের প্রভু। মুসলমানদেরকে মানবজাতির কাছে তাঁর পয়গাম পৌছানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আফসুসের বিষয়, অধিকাংশ মুসলিমই এই মহান ফরজটি ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহন করলেও যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌছেনি, তাদের কাছে তা পৌছানোর দায়িত্ব পালনের হ্মেত্রে অনীহা প্রকাশ করি।

‘দাওয়াহ’ একটি আরবী শব্দ। এর অর্থহল, আহবান করা বা ডাকা। ইসলামের পরিভাষায় দাওয়াত বলতে বুঝায় ইসলামের প্রচার কার্যে অংশ নেয়া।

পবিত্র কোরআন মজীদ বলছেঃ

‘আহা! তার চেয়ে বেশী অত্যাচারী কে হতে পারে ? কিন্থ আল্লাহ তোমার কর্ম সম্পর্কে বেখবর নন। -সূরা আল বাকারা-১৪০

২০টি প্রচলিত প্রশ্নাবলী ঃ

ইসলামের পয়গাম পৌছানোর জন্য আলোচনা এবং বিতর্ক অপরিহার্য। পবিত্র কোরআন বলেছে, আপনার পালনকর্তার পথে প্রতি আহবান করুন, প্রজ্ঞা, কৌশল উত্তম উপদেশ সহকারে এবং তাদের সাথে উত্তম যুক্তি সহকারে বিতর্ক করুন। -সূরা ১৬: ১২৫

একজন অমুসলিমের কাছে ইসলাম প্রচারের হ্মেত্রে শুধুমাত্র ইসলামের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরাই যথেষ্ট নয়। অধিকাংশ অমুসলিমের ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট না হওয়ার কারণ হল, তাদের মনে ইসলাম সম্পর্কিত কিছু জিজ্ঞাসা উত্তর বিহীন থেকে যায়।

তারা আপনার সাথে ইসলামের ইতিবাচক দিকগুলো সম্পর্কে সম্মতি জ্ঞাপন করতে পারে। কিন্থ একই সাথে তারা বলবে “হায়! তুমিও সে একই মুসলিম যে একের অধিক স্ত্রীলোককে বিবাহ করতে পার! তুমিও সে একই মানুষ, যে পর্দার আড়ালে মেয়েদেরকে অধীনস্থ করে রাখ, তুমি মৌলবাদী ইত্যাদি।

আমি ব্যক্তিগতভাবে অমুসলিমদেরকে সামনা সামনি জিজ্ঞেস করাকে প্রাধান্য দেই। ভুল হোক আর শুদ্ধ হোক, উৎস যাই হোক না কেন, ইসলাম সম্পর্কে তাদের সীমিত জ্ঞানটুকু ভুল, আমি তাদেরকে খোলা ও মন নিয়ে প্রশ্ন করতে উৎসাহিত করি এবং ইসলামের ব্যাপারে আমি তাদের সমালোচনা মেনে নিতে প্রস্তুত বলে জানাই।

গত কয়েক বছরের দাওয়াতে দ্বীনের অভিজ্ঞতার আলোকে আমি বুঝতে পেরেছি যে, ইসলামের মধ্যে কোন জিনিসকে ত্রুটি মনে করেন?’’ তিনি তখন পাঁচটি কি ছয়টি প্রশ্ন করলেন যেগুলো স্বভাবতই ২০ টি সাধারণ প্রশ্নাবলীর মধ্যে পড়ে।

যুক্তিসম্মত উত্তর অধিকাংশকে আকৃষ্ট করে

ইসলামের ব্যাপারে ৩০ টি প্রশ্নের উত্তর, কারণ এবং যু্‌ক্তির সাথে দিতে হবে। অধিকাংশ অমুসলিম এই উত্তরগুলো দ্বারা আকৃষ্ট হয়। যদি একজন ইসলামের সত্যতার প্রতি আকৃষ্ট করতে না পারলেও ইসলাম সম্পর্কে তাদের ভুল ধারণা দূর করতে এবং ইসলাম ও মুসলমানদের বিষয়ে তাদের নেতিবাচক চিন্তাকে নিরপেক্ষ করতে পারবে।

প্রচার মাধ্যমের বিভ্রান্তিঃ

অধিকাংশ অমুসলিমের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি হয়ে আছে। কারণ তারা অনবরত ইসলাম সর্ম্পকে ভুল ধারণা দ্বারা বিভ্রান্ত। আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমগুলো পশ্চিমা দেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সেটা আন্তর্জাতিক স্যাটেলইট চ্যানেল, রেডিও স্টেশন,সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন অথবা বই-ই যাই হোক না কেন। সমপ্রতি ইন্টারনেট সবচেয়ে বড় যোগাযোগের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে যদিও এটা কারো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। তবুও যে কেউ তাতে ইসলামের অনেক বিষাক্ত অপঃপ্রচার দেখতে পারে। অবশ্য মুসলমানরাও এ হাতিয়ারকে ইসলামের সঠিক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য ব্যবহার করেছে। কিন্তু ইসলামের বিরুদ্ধে অপঃপ্রচারের প্রবল ঝড়ের তুলনায় তারা অনেক পিছে পড়ে আছে। আমি আশা করি মুসলমানদের প্রচেষ্টা অব্যাহত ভাবে বাড়তে থাকবে।

সময়ের সাথে ভ্রান্ত ধারণার পরিবর্তনঃ

বিভিন্ন সময় এবং বিভিন্ন যুগে ইসলামের ব্যাপারে প্রশ্ন বিভিন্ন হয়। আলোচ্য ২০টি প্রশ্ন বর্তমান সময়ের ফসল । দশ বছর আগে ২০টি প্রশ্নের ধরন অন্য রকম ছিল এবং দশ বৎসর পরেও অন্যরকম হবে। প্রশ্নের এ ধারা পরিবর্তিত হয় প্রচার মাধ্যম কিভাবে ইসলামকে প্রচার করছে তার উপর।

বিশ্বের ভ্রান্ত ধারণাগুলো একই

আমি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার অনেক মানুষের সাথে মত বিনিময়ের সময় দেখেছি যে, সব জায়গায় ইসলামের ব্যাপারে ২০টি প্রশ্ন একই ও অভিন্ন। স্থান কাল ও সংস্কৃতি ভেদে আরো কিছু প্রশ্ন ও থাকতে পারে। যেমন আমেরিকায় সূদ দেয়া নেয়া কেন হারাম এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়।

আমি এসকল প্রশ্নগুলো থেকে মাত্র ২০টি প্রশ্ন বাছাই করেছি যা ভারতের অমুসলমানদের পহ্ম থেকেই উত্থাপন করা হয়। উদাহরন স্বরুপ বলা যায়, কেন মুসলমানরা সবজী বহির্ভূত খাবার (প্রাণীজ আমিষ) খায় ? এ জাতীয় প্রশ্ন শামিল করার কারণ হল, ভারত বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠী বিশ্বের সর্বত ছড়িয়ে আছে এবং তারা গোটা বিশ্বের এক পঞ্চমাংশ জনশক্তি। ফলে তাদের প্রশ্ন বিশ্বের অন্যান্য অমুসলমানদেরও সাধারন প্রশ্নে পরিণত হয়েছে।

ইসলাম সম্পর্কে অধ্যয়নকারী অমুসলমানদের ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারনাঃ

বহু অমুসলিম ইসলামকে নিয়ে অধ্যয়ন করেছেন। তাদের অধিকাংশর অবস্থা হল, তারা ইসলামের সমালোচকদের লেখা বই-পুস্তকই পড়েছেন। এসব অমুসলিমের ইসলাম সম্পর্কে অতিরিক্ত আরো ২০টি ভুল ধারণা রয়েছে। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, তারা দাবী করে যে, কোরআন মাজীদে বৈপরিত্য আছে এবং কোরাআন অবৈজ্ঞানিক ইত্যাদি। বিকৃত উৎস থেকে ইসলামের জ্ঞান আহরণকারীরা অমুসলিমদের ঐ ২০টি প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন। আমি নিজেও অপেহ্মাকৃত কম ঐ ২০টি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর জনসভার এবং নিম্নোক্ত বইতে দিয়েছি। বইটির নাম হলঃ

“Answers to common questions about Islam by non-Muslims who have some knowledge about Islam”



সর্বশেষ আপডেট ( Saturday, 07 November 2009 )