রিয়াদুস সালেহীন - দ্বিতীয় খণ্ড প্রিন্ট কর ইমেল
লিখেছেন ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহ্ইয়া আন-নববী   
Wednesday, 08 October 2008

রিয়াদুস সালেহীন
দ্বিতীয় খণ্ড

49- باب إجراء أحكام الناس عَلَى الظاهر
وسرائرهم إِلَى الله تَعَالَى


অনুচ্ছেদঃ ৪৯
মানুষের বাহ্যিক কাজের উপর ধর্মীয় নির্দেশ বাস্তবায়িত হবে; আর তাদের আভ্যন্তরীণ অবস্থা আল্লাহর উপর সমর্পিত।


قَالَ الله تَعَالَى : " فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُم " [ التوبة : 5 ] .


“অতঃপর তারা যদি তওবা করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত দেয়, তবে তোমরা তাদের পথ ছেড়ে দাও” (সূরা আত-তাওবাঃ à§«)।

 

390- وعن ابن عمر رضي الله عنهما : أنَّ رَسُول الله ﷺ ، قَالَ : (( أُمِرْتُ أنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أنْ لاَ إلهَ إلاَّ الله ، وَأنَّ مُحَمَّداً رَسُول الله ، وَيُقيمُوا الصَّلاةَ ، وَيُؤتُوا الزَّكَاةَ ، فَإِذَا فَعَلُوا ذلِكَ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءهُمْ وَأمْوَالَهُمْ إلاَّ بحَقِّ الإسْلاَمِ ، وَحِسَابُهُمْ عَلَى الله تَعَالَى )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .

 

৩৯০। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি ততক্ষণ পর্যন্ত লোকদেও বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) আদিষ্ট, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ্‌ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল, আর তারা নামায কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে। তারা এগুলো করলে তাদের রক্ত ও সম্পদ আমার কাছ থেকে নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামের হক (অপরাধের শাস্তি) তাদের উপর থাকবে। আর তাদের প্রকৃত ফয়সালা আল্লাহ তাআলার উপর সমর্পিত।
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম এ হাদীস উদ্ধৃত করেছেন।
_____________________________
 [أخرجه : البخاري 1/12 ( 25 ) ØŒ ومسلم 1/39 ( 22 ) ( 36 )]
[বুখারী: ১/১২(২৫), মুসলিম: ১/৩৯(২২)(৩৬)]

 

391- وعن أَبي عبدِ الله طارِق بن أشَيْم ، قَالَ : سَمِعْتُ رَسُول الله ﷺ ، يقول : (( مَنْ قالَ لاَ إلهَ إلاَّ الله ، وَكَفَرَ بما يُعْبَدُ مِنْ دُونِ اللهِ ، حَرُمَ مَالُهُ وَدَمُهُ ، وَحِسَابُهُ عَلَى الله تَعَالَى )) رواه مسلم .

 

৩৯১। আবূ আব্দুল্লাহ তারেক ইবনে উশায়েম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি বলে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ্‌ নেই, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য যেসব বস্তুর পূজা করা হয়, সে সেগুলোকে অস্বীকার করে, তার জান ও মাল নিরাপদ হয়ে গেল; আর তার হিসাব মহান আল্লাহর উপর সমর্পিত।
ইমাম মুসলিম হাদীসটি রিওয়ায়েত করেছেন।
_____________________________
[أخرجه : مسلم 1/39 ( 23 ) ( 37 )]
[মুসলিম: ১/৩৯(২৩)(৩৭)]

392- وعن أَبي معبد المقداد بن الأسْود  ØŒ قَالَ : قُلْتُ لرسول الله ï·º : أرَأيْتَ إنْ لَقِيتُ رَجُلاً مِنَ الكُفَّارِ ØŒ فَاقْتتَلْنَا ØŒ فَضَرَبَ إحْدَى يَدَيَّ بِالسَّيْفِ ØŒ   فَقَطَعَها ØŒ ثُمَّ لاذَ مِنِّي بِشَجَرَةٍ ØŒ فَقَالَ : أسْلَمْتُ لِلهِ ØŒ أأقْتُلُهُ يَا رَسُول الله بَعْدَ أنْ قَالَهَا ØŸ فَقَالَ : (( لا تَقْتُلهُ )) فَقُلْتُ : يَا رَسُول الله ØŒ قَطَعَ إحْدَى يَدَيَّ ØŒ ثُمَّ قَالَ ذلِكَ بَعْدَ مَا قَطَعَهَا ØŸ! فَقَالَ : (( لا تَقتُلْهُ ØŒ فإنْ قَتَلْتَهُ فَإنَّهُ بِمَنْزِلَتِكَ قَبْلَ أنْ تَقْتُلَهُ ØŒ وَإنَّكَ بِمَنْزِلَتِهِ قَبْلَ أنْ يَقُولَ كَلِمَتَهُ التي قَالَ )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
ومعنى (( أنه بمنـزلتك )) أي : معصوم الدم محكوم بإسلامه . ومعنى (( أنك بمنـزلته )) أي : مباح الدمِ بالقصاص لورثتهِ لا أنه بمنـزلته في الكفر ، والله أعلم .

৩৯২। আবূ মাবাদ মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি কি বলেন যদি কোন কাফেরের সাথে আমার মোকাবেলা হয় এবং পারস্পরিক যুদ্ধে সে আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য একটি গাছের আড়ালে আশ্রয় নিয়ে বলে, আমি আল্লাহর জন্য ইসলাম গ্রহণ করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তার ঐ কথা বলার পর আমি কি তাকে হত্যা করব? তিনি বলেনঃ তাকে হত্যা করো না। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! সে তো আমার দুই হাতের একটি কেটেছে, অতঃপর একথা বলেছে। তিনি বলেনঃ তাকে হত্যা করো না। কেননা তুমি যদি তাকে হত্যা করো, তাহলে তুমি তাকে হত্যা করার পূর্বে যে মর্যাদায় ছিলে, সে সেই মর্যাদায় পৌঁছে যাবে; আর যে কলেমা সে পাঠ করেছে, সেই কলেমা পাঠের পূর্বে সে যে স্তরে ছিল; তুমি(তাকে হত্যা করলে) সেই স্তরে নেমে যাবে।
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন। أنه بمنزلتك কথার অর্থ হলো: ইসলাম গ্রহণ করার কারণে সে ব্যক্তির রক্তপাত হারাম হয়ে গেছে। আর أنه بمنزلته কথার অর্থ হলো: তুমি তাকে হত্যা করার দরুন তার ওয়ারিসদের পক্ষ থেকে কিসাস স্বরূপ তোমার রক্ত প্রবাহিত করা তাদের জন্য বৈধ হয়ে যাবে। কিন্তু তুমি তার মত কাফের হয়ে যাবে না। আল্লাহই ভালো জানেন।
_____________________________
 [أخرجه : البخاري 5/109 ( 4019 ) ØŒ ومسلم 1/66 ( 95 ) ( 155 )]
[বুখারী: ৫/১০৯(৪০১৯), মুসলিম: ১/৬৬(৯৫)(১৫৫)]

393- وعن أُسَامة بن زيدٍ رضي الله عنهما ، قَالَ : بعثنا رَسُول الله ﷺ إِلَى الْحُرَقَةِ مِنْ جُهَيْنَةَ فَصَبَّحْنَا القَوْمَ عَلَى مِيَاهِهِمْ ، وَلَحقْتُ أنَا وَرَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ رَجُلاً مِنْهُمْ ، فَلَمَّا غَشَيْنَاهُ ، قَالَ : لاَ إلهَ إلاَّ الله ، فَكفَّ عَنْهُ الأَنْصَاري ، وطَعَنْتُهُ برُمْحِي حَتَّى قَتَلْتُهُ ، فَلَمَّا قَدِمْنَا المَدِينَةَ ، بَلَغَ ذلِكَ النَّبيَّ ﷺ فَقَالَ لِي : (( يَا أُسَامَة ، أقَتَلْتَهُ بَعْدَ مَا قَالَ لا إلهَ إلاَّ اللهُ ؟! )) قُلْتُ : يَا رَسُول الله ، إِنَّمَا كَانَ متعوِّذاً ، فَقَالَ : (( أقَتَلْتَهُ بَعْدَ مَا قَالَ لا إلهَ إلاَّ اللهُ ؟! )) فما زَالَ يُكَرِّرُهَا عَلَيَّ حَتَّى تَمنْيَّتُ أنِّي لَمْ أكُنْ أسْلَمْتُ قَبْلَ ذلِكَ اليَوْمِ . مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
وفي رواية : فَقَالَ رَسُول الله ﷺ : (( أقالَ : لا إلهَ إلاَّ اللهُ وقَتَلْتَهُ ؟! )) قُلْتُ : يَا رَسُول الله ، إِنَّمَا قَالَهَا خَوْفاً مِن السِّلاحِ ، قَالَ : (( أَفَلاَ شَقَقْتَ عَنْ قَلْبِهِ حَتَّى تَعْلَمَ أَقَالَهَا أمْ لا ؟! )) فمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا حَتَّى تَمَنَّيْتُ أنِّي أسْلَمْتُ يَوْمَئذٍ .
(( الحُرَقَةُ )) بضم الحاءِ المهملة وفتح الراءِ : بَطْنٌ مِنْ جُهَيْنَةَ : القَبِيلةُ المَعْرُوفَةُ . وقوله : (( مُتَعَوِّذاً )) : أيْ مُعْتَصِماً بِهَا مِنَ القَتْلِ لاَ معْتَقِداً لَهَا .

৩৯৩। উসামা ইবনে যায়েদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জুহায়না গোত্রের খেজুরের বাগানে প্রেরণ করেন। আমরা প্রত্যুষে তাদের পানির ঝর্ণা ঘেরাও করি। অতঃপর আমি ও জনৈক আনসারী তাদের এক ব্যক্তিকে ধরে ফেলি এবং তার উপর চড়াও হই। অমনি সে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে। (একথা শুনেই) আনসারী থেমে যায়; আর আমি আমার বর্শার আঘাতে তাকে হত্যা করি। অতঃপর আমরা মদিনায় ফিরে এলে সেই হত্যার ঘটনা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কানে পৌঁছল। তিনি আমাকে বললেনঃ হে উসামা সে লা ইলাহ ইল্লাল্লাহ্ বলার পরও তাকে হত্যা করলে? আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! তা তো ছিল জান বাঁচানোর জন্য। তিনি বললেনঃ সে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরও তুমি তাকে হত্যা করলে? অতঃপর তিনি বারবার একথা বলতে লাগলেন যে, আমি যদি ইতোপূর্বে মুসলমান না হতাম (তা হলে এই গুনাহ আমার ভাগ্যে লেখা হতো না)। ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম এ হাদীস উদ্ধৃত করেছেন।
অপর এক বর্ণনায় আছেঃ অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সে লা ইলাহা বলল, আর তুমি তাকে হত্যা করলে? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! সে তো তরবারির ভয়ে এ কথা বলেছে। তিনি বললেনঃ তুমি তার অন্তর ফেড়ে দেখলে না কেন, তাহলে জানতে পারতে সে তা তার অন্তর থেকে বলেছে কি না! তিনি বরাবর এ কথা বলতে লাগলেন, এমনকি আমি আক্ষেপ করতে লাগলাম, আমি যদি আজই মুসলমান হতাম।
_____________________________
[أخرجه : البخاري 9/4 ( 6872 ) ، ومسلم 1/67 ( 96 ) ( 158 ) و68 ( 96 ) ( 159 )]
[বুখারী: ৪/৯(৬৮৭২), মুসলিম: ১/৬৭(৯৬)(১৫৮) ও ৬৮(৯৬)(১৫৯)]

394- وعن جندب بن عبد الله  : أنَّ رَسُول الله ï·º بَعَثَ بَعْثاً مِنَ المُسْلِمينَ إِلَى قَومٍ مِنَ المُشرِكينَ ØŒ وَأنَّهُمْ التَقَوْا ØŒ فَكَانَ رَجُلٌ مِنَ المُشْركينَ إِذَا شَاءَ أنْ يَقْصِدَ إِلَى رَجُل مِنَ المُسْلِمينَ قَصَدَ لَهُ فَقَتَلَهُ ØŒ وَأنَّ رَجُلاً مِنَ المُسْلِمِينَ قَصَدَ غَفْلَتَهُ . وَكُنَّا نتحَدَّثُ أنَّهُ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ ØŒ فَلَمَّا رَفَعَ عَلَيهِ السَّيفَ ØŒ قَالَ : لا إلهَ إلاَّ اللهُ ØŒ فَقَتَلهُ ØŒ فَجَاءَ البَشيرُ إِلَى رَسُول الله ï·º فَسَألَهُ وَأخبَرَهُ ØŒ حَتَّى أخْبَرَهُ خَبَرَ الرَّجُلِ كَيْفَ صَنَعَ ØŒ فَدَعَاهُ فَسَألَهُ ØŒ فَقَالَ : (( لِمَ قَتَلْتَهُ ØŸ )) فَقَالَ : يَا رَسُول اللهِ ØŒ أوْجَعَ في المُسلِمِينَ ØŒ وَقَتَلَ فُلاناً وفلاناً ØŒ وسمى لَهُ نَفراً ØŒ وَإنِّي حَمَلْتُ عَلَيهِ ØŒ فَلَمَّا رَأى  السَّيفَ ØŒ قَالَ : لا إلهَ إلاَّ اللهُ . قَالَ رَسُول الله ï·º :  (( أقَتَلْتَهُ ØŸ )) قَالَ : نَعَمْ . قَالَ : (( فَكَيفَ تَصْنَعُ بلاَ إلهَ إلاَّ اللهُ ØŒ إِذَا جَاءتْ يَوْمَ القِيَامَةِ ØŸ )) قَالَ : يَا رَسُول الله ØŒ اسْتَغْفِرْ لِي . قَالَ : (( وكَيفَ تَصْنَعُ بِلا إلهَ إلاَّ الله إِذَا جَاءتْ يَوْمَ القِيَامَةِ ØŸ )) فَجَعَلَ لاَ يَزِيدُ عَلَى أنْ يَقُولَ : (( كَيفَ تَصْنَعُ بِلا إلهَ إلاَّ الله إِذَا جَاءتْ يَوْمَ القِيَامَةِ )) رواه مسلم .

৩৯৪। জুনদুব ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুশরিকদের একটি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য একটি মুসলিম বাহিনী প্রেরণ করলেন। তাদের মোকাবেলা হল। মুশরিকদের এক ব্যক্তি ছিল অত্যন্ত সাহসী। সে মুসলমানদের যাকে পেতো তাকেই হত্যা করতো। মুসলমানদের মধ্যে এক ব্যক্তি সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। আমরা পরস্পর বলাবলি করলাম যে, তিনি তো উসামা ইবনে যায়েদ। (সুযোগ পেয়ে) তিনি যখন তরবারি উঠান, সে বলে উঠলো, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। তদুপরি তিনি তাকে হত্যা কর ফেললেন। তারপর বিজয়ের সুসংবাদ বাহক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌঁছল। তিনি পরিস্থিতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। সে সব অবহিত করলো, এমনকি সেই লোকটি কিরূপ করেছিল, তাও বললো। তিনি তাকে(উসামাকে) ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তাকে হত্যা করলে কেন? তিনি বললেন ইয়া রাসূলুল্লাহ! সে তো মুসলমানদের মাঝে সন্ত্রাস ও ভীতির সঞ্চার করেছিল এবং অমুক অমুককে হত্যাও করেছে। তিনি কয়েক জনের নাম উল্লেখ করলেন। আমি(সুযোগ পেয়ে) যখন আক্রমণ করি(সে তরবারি দেখে ফেলে), অমনি বলে উঠে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি তাকে হত্যা করলে? তিনি জবাব দিলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন তুমি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”র কি উত্তর দিবে? উসামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন তুমি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”র কি উত্তর দিবে? তিনি এর থেকে আর কোন কিছু বাড়িয়ে বলেননি যে, “কিয়ামতের দিন তুমি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর কি জবাব দিবে?
(ইমাম মুসলিম এ হাদীসটি রিওয়ায়েত করেছেন)
_____________________________
[أخرجه : مسلم 1/68 ( 97 ) ( 160 )]
[মুসলিম: ১/৬৮(৯৭)(১৬০)]

395- وعن عبد الله بن عتبة بن مسعود ØŒ قَالَ : سَمِعْتُ عمر بن الخطاب   ØŒ يقولُ : إنَّ نَاساً كَانُوا يُؤْخَذُونَ بِالوَحْيِ في عَهْدِ رَسُول الله ï·º ØŒ وَإنَّ الوَحْيَ قَدِ انْقَطَعَ ØŒ وإِنَّمَا نَأخُذُكُمُ الآن بما ظَهَرَ لَنَا مِنْ أعمَالِكُمْ ØŒ فَمَنْ أظْهَرَ لَنَا خَيْراً أمَّنَّاهُ وَقَرَّبْنَاهُ ØŒ وَلَيْسَ لَنَا مِنْ سَرِيرَتِهِ شَيْء ØŒ اللهُ يُحَاسِبُهُ فِي سَرِيرَتِهِ ØŒ وَمَنْ أظْهَرَ لَنَا سُوءاً لَمْ نَأمَنْهُ وَلَمْ نُصَدِّقْهُ وَإنْ قَالَ : إنَّ سَرِيرَتَهُ حَسَنَةٌ . رواه البخاري .

৩৯৫। আব্দুল্লাহ উতবা ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত। তিনি বলেন,আমি উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কে বলতে শুনেছিঃ রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে মানুষকে ওহীর মাধ্যমে যাচাই করা হতো। আর এখন তো ওহী বন্ধ হয়ে গেছে। সুতরাং আমরা এখন থেকে তোমাদের যাচাই করবো তোমাদের বাহ্যিক কাজ-কর্মের ভিত্তিতে। যে ব্যক্তি আমাদের সামনে ভাল কাজের প্রকাশ ঘটাবে, আমরা তাত বিশ্বাস করবো এবংতাকে নিকটবর্তী বলে গ্রহণ করে নেবো, আর তার অভ্যন্তরীণ ব্যাপার দেখার আমাদের দরকার নেই। আর যে ব্যক্তি মন্দ কাজের প্রকাশ ঘটাবে অর্থাৎ বাহ্যত মন্দ কাজ করবে,তবে সে যদিও বলে যে, তার অভ্যন্তরীণ অবস্থা খুবই ভাল, তবুও আমরা তার কথা মানবো না এবং তার কথা বিশ্বাসও করবো না। (ইমাম বুখারী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। )
_____________________________
[أخرجه : البخاري 3/221 ( 2641 )]
[বুখারী: ৩/২২১ ( ২৬৪ )]

396- عن ابن مسعود  ØŒ قَالَ : حدثنا رَسُول الله ï·º وَهُوَ الصادق المصدوق : (( إنَّ أحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ في بَطْنِ أُمِّهِ أربَعِينَ يَوماً نُطْفَةً ØŒ ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ ذلِكَ ØŒ ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذلِكَ ØŒ ثُمَّ يُرْسَلُ المَلَكُ ØŒ فَيَنْفُخُ فِيهِ    الرُّوحَ ØŒ وَيُؤْمَرُ بِأرْبَعِ كَلِمَاتٍ : بِكَتْبِ رِزْقِهِ وَأجَلِهِ وَعَمَلِهِ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ . فَوَالَّذِي لا إلهَ غَيْرُهُ إنَّ أحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ الجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وبيْنَهَا إلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيهِ الكِتَابُ ØŒ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ النَّارِ فَيدْخُلُهَا ØŒ وَإنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إلاَّ ذراعٌ ØŒ فَيَسْبِقُ عَلَيهِ الكِتَابُ فَيعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ الجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .

৩৯৬। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সর্বসমর্থিত সত্যবাদী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেককে তার মায়ের পেটে চল্লিশ দিন পর্যন্ত শুক্র আকারে জমা রাখা হয়। অতঃপর তা রক্তপিণ্ডে পরিণত হয়ে এই পরিমাণ সময় থাকে এবং পরে তা মাংসপিণ্ড আকারে অনুরূপ সময় জমা রাখা হয়। অতঃপর একজন ফেরেশতা পাঠানো হয়। তিনি তাতে আত্মা ফুঁকে দেন এবং চারটি বিষয় লেখার আদেশ করা হয়। তাহলোঃ তার রিযিক, তার হায়াত, তার আমল ও সে দুর্ভাগ্যবান হবে অথবা সৌভাগ্যবান হবে। সেই সত্তার শপথ যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই! তোমাদের কেউ জান্নাতবাসীদের আমল করবে, এমনকি তার মাঝে ও জান্নাতের মাঝে মাত্র একহাত ব্যবধান থাকবে। অতঃপর তার কিতাবের লিখন সামনে এসে উপস্থিত হবে। ফলে সে জাহান্নামীদের আমল করবে এবং তাতে প্রবেশ করবে। আর তোমাদের কেউ জাহান্নামীদের কাজ করবে, এমনকি তার মাঝে ও জাহান্নামের মাঝে মাত্র একহাত ব্যবধান থাকবে। অতঃপর তার কিতাবের লিখন সামনে এসে উপস্থিত হবে। ফলে সে জান্নাতীদের আমল করবে এবং তাতে প্রবেশ করবে। (ইমাম বুখারী: ৩২০৮ ও ইমাম মুসলিম: ২৬৪৩ এ হাদীস রিওয়ায়েত করেছেন।)
_____________________________
[أخرجه : البخاري 9/165 ( 7454 ) ، ومسلم 8/44 ( 2643 ) ( 1 )]
[বুখারী: 9/165 ( 7454 ), মুসলিম: 8/44 ( 2643 )]

397- وعنه ، قَالَ : قَالَ رَسُول الله ﷺ : (( يُؤتَى بِجَهَنَّمَ يَومَئذٍ لَهَا سَبْعُونَ ألفَ زِمَامٍ ، مَعَ كُلِّ زِمَامٍ سَبعُونَ ألْفَ مَلَكٍ يَجُرُّونَهَا )) رواه مسلم .

৩৯৭। ইবনে মাসউদরাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সেদিন জাহান্নামের সত্তর হাজার লাগাম হবে, আবার প্রতিটি লাগামের জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা থাকবে এবং এ লাগাম ধরে এটাকে টানবে। (ইমাম মুসলিম এ হাদীস উদ্ধৃত করেছেন)
_____________________________
[أخرجه : مسلم 8/149 ( 2842 ) ( 29 )]
[মুসলিম: 8/149 ( 2842 ) ( 29 )]

398- وعن النعمان بن بشير رضي الله عنهما ، قَالَ : سَمِعْتُ رَسُول الله ﷺ ، يقول : (( إنَّ أهْوَنَ أهْلِ النَّارِ عَذَاباً يَوْمَ القِيَامَةِ لَرَجُلٌ يوضعُ في أخْمَصِ قَدَمَيْهِ جَمْرَتَانِ يَغْلِي مِنْهُمَا دِمَاغُهُ . مَا يَرَى أنَّ أَحَداً أشَدُّ مِنْهُ عَذَاباً ، وَأنَّهُ لأَهْوَنُهُمْ عَذَاباً )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .

৩৯৮। নুমান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ কিয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে লঘু শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তির শাস্তি হবে এই যে, তার দুই পায়ের তালুর নিচে আগুনের দু’টি অংগার রাখা হবে এবং তাতে তার মস্তিষ্ক সিদ্ধ হতে থাকবে। সে মনে করবে, তার চাইতে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি আর কেউ হয়নি। অথচ সে-ই জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে হালকা শাস্তিপ্রাপ্ত।
_____________________________
[أخرجه : البخاري 8/144 ( 6562 ) ، ومسلم 1/135 ( 213 ) ( 363 )و( 364 )]
[বুখারী: 8/144 ( ৬৫৬২ ), মুসলিম: 1/135 ( ২১৩ ) ( 363 ) ও ( 364 )]

399- وعن سمرة بن جندب  : أنَّ نبيَّ الله ﷺ ، قَالَ : (( مِنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ النَّارُ إِلَى كَعْبَيهِ ، وَمنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ إِلَى رُكْبَتَيهِ ، وَمنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ إِلَى حُجزَتِهِ ، وَمِنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ إِلَى تَرْقُوَتِهِ )) رواه مسلم .
(( الحُجْزَةُ )) : مَعْقِدُ الإزار تَحْتَ السُّرَّةِ ، وَ(( التَّرْقُوَةُ )) بفتح التاءِ وضم القاف : هي العَظمُ الَّذِي عِنْدَ ثَغْرَةِ النَّحْرِ ، وَللإنْسَانِ تَرْقُوتَانِ في جَانبَي النَّحْرِ .

৩৯৯। সামুরা ইবনে জুনদুব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জাহান্নামের আগুনে দোযখীদের কারো গোড়ালী পর্যন্ত, কারো হাটু পর্যন্ত, কারো কোমর পর্যন্ত এবং কারো গলা পর্যন্ত পুড়তে থাকবে (প্রত্যেকে নিজ নিজ গুনাহ অনুযায়ী শাস্তিতে পতিত হবে)। (ইমাম মুসলিম এ হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন)
_____________________________
[أخرجه : مسلم 8/150 ( 2845 ) ( 33 )]
[মুসলিম: 8/150 ( 2845 ) ( 33 )]

400- وعن ابن عمر رضي الله عنهما : أنَّ رَسُول الله ﷺ ، قَالَ : (( يَقُومُ النَّاس لِرَبِّ العَالَمينَ حَتَّى يَغِيبَ أحَدُهُمْ في رَشْحِهِ إِلَى أنْصَافِ أُذُنَيهِ )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
وَ(( الرَّشْحُ )) : العَرَقُ .

৪০০। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ মানুষ যেদিন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সামনে দাঁড়াবে, সেদিন তাদের কেউ কেউ তার নিজের ঘামে কানের অর্ধাংশ পর্যন্ত ডুবে যাবে। [ইমাম বুখারী ও মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আর রাশুহ্ অর্থ ঘাম।]
_____________________________
[أخرجه : البخاري 6/207 ( 4938 ) ، ومسلم 8/157 ( 2862 ) ( 60 )]
[বুখারী: 6/207 ( 4938 ), মুসলিম: 8/157 ( 2862 )]

401- وعن أنس  ، قَالَ : خطبنا رَسُول الله ﷺ خطبة مَا سَمِعْتُ مِثلها قطّ ، فَقَالَ : (( لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أعْلَمُ ، لَضحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيتُمْ كَثِيراً )) فَغَطَّى أصْحَابُ رَسُول الله ﷺ وَجُوهَهُمْ ، وَلَهُمْ خَنَينٌ . مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
وفي رواية : بَلَغَ رَسُول الله ﷺ عَنْ أَصْحَابِهِ شَيْءٌ فَخَطَبَ ، فَقَالَ : (( عُرِضَتْ عَلَيَّ الجَنَّةُ وَالنَّارُ ، فَلَمْ أرَ كَاليَومِ في الخَيرِ وَالشَّرِّ ، وَلَوْ تَعْلَمونَ مَا أعلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيراً )) فَمَا أتَى عَلَى أصْحَابِ رَسُول الله ﷺ يَوْمٌ أَشَدُّ مِنْهُ ، غَطَّوْا رُؤُسَهُمْ وَلَهُمْ خَنِينٌ .
(( الخَنِينُ )) بالخاءِ المعجمة : هُوَ البُكَاءُ مَعَ غُنَّة وانتِشَاقِ الصَّوْتِ مِنَ الأنْفِ .

৪০১। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামনে ভাষণ দান করেন যার অনুরূপ আমি আর কখনো শুনিনি। তিনি বলেনঃ আমি  যা জানি তোমরা যদি তা জানতে পারতে, তবে নিশ্চয়ই খুব কম হাসতে  এবং খুব বেশি কাঁদতে। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাহাবীগণ কাপড়ে মুখ ঢেকে ফেললেন এবং ডুকরে কাঁদতে শুরু করেন। (ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)

অপর এক বর্ণনায় আছেঃ একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদের কাছ থেকে কোন ব্যাপারে কিছু শুনতে পেয়ে একটি।ভাষণ দেন। তাতে তিনি বলেনঃ আমার সামনে জান্নাত ও জাহান্নাম পেশ করা হয়েছে। সেদিনের মতো ভালো আর মন্দ আর কখনো দেখিনি। আমি এ ব্যাপারে যা জানি, তোমরাও যদি তা জানতে পারতে তবে অবশ্যই হাসতে খুব কম এবং কাঁদতে খুব বেশি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদেও উপর এদিনের মতো কঠিন দিন আর আসেনি। তাই তারা তাদের মাথা ঢেকে ফেলেন এবং ডুকরে কাঁদতে থাকেন। আল খানিন অর্থ নাকের বাঁশির শব্দসহ ফুঁপিয়ে কান্নাকাটি করা।
_____________________________
[أخرجه : البخاري 6/68 ( 4621 ) ، ومسلم 7/92 ( 2359 ) ( 134 )]
[বুখারী: 6/68 ( 4621 ), মুসলিম: 7/92 ( 2359 ) ( 134 )]

402- وعن المقداد  ، قَالَ : سمِعْتُ رَسُول الله ﷺ ، يقول : (( تُدْنَى الشَّمْسُ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنَ الخَلْقِ حَتَّى تَكُونَ مِنْهُمْ كَمِقْدَارِ مِيلٍ )) قَالَ سُلَيْم بنُ عامِر الراوي عن المقداد : فَوَاللهِ مَا أدْرِي مَا يعني بالمِيلِ ، أمَسَافَةَ الأرضِ أَمِ المِيلَ الَّذِي تُكْتَحَلُ بِهِ العَيْنُ ؟ قَالَ : (( فَيكُونُ النَّاسُ عَلَى قَدْرِ أعْمَالِهِمْ في العَرَقِ ، فَمِنْهُمْ مَنْ يَكُونُ إِلَى كَعْبَيْهِ ، ومنهم من يكون إِلَى ركبتيه ، ومنهم مَنْ يَكُونُ إِلَى حِقْوَيْهِ(1) ، وَمِنْهُمْ مَنْ يُلْجِمُهُ العَرَقُ إلْجَاماً )) . قَالَ : وَأَشَارَ رَسُول الله ﷺ بيدهِ إِلَى فِيهِ . رواه مسلم .

৪০২ । মিকদাদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ কিয়ামতের দিন সূর্যকে  সৃষ্টজীবের এতো কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে যে, তা তাদের থেকে এক মাইলের ব্যবধানে অবস্থান করবে। এ হাদীসের রাবী সুলাইম ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করে বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি জানিনা, মাইল বলতে এটা কি জমিনের দূরত্ব বুঝানোর মাইল বলা হয়েছে নাকি চোখে সুরমা দেয়ার শলাকা বুঝানো হয়েছে? (রাসূল সাঃ আরো বলেনঃ) অতঃপর মানুষ তাদের আমল অনুযায়ী ঘামের ভেতর ডুবতে থাকবে। তাদের কেউ গোড়ালি পর্যন্ত, কেউ হাটু পর্যন্ত, কেউ কোমর পর্যন্ত ঘামের মধ্যে ডুবে থাকবে। আর তাদের মধ্যে কাউকে ঘামের লাগাম পড়ানো হবে। একথা বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের হাত দিয়ে তার মুখের দিকে ইশারা করেন অর্থাৎ কারো মুখ পর্যন্ত ঘামে ডুবে থাকবে। (ইমাম মুসলিম এ হাদীস উদ্ধৃত করেছেন।)
_____________________________
[أخرجه : مسلم 8/158 ( 2864 ) ( 62 )]
[মুসলিম: 8/158 ( 2864 ) ( 62 )]
[1- أي مَعقِد الإزار . النهاية 1/417]
[1. @]

403- وعن أَبي هريرة  : أن رَسُول الله ï·º ØŒ قَالَ : (( يَعْرَقُ النَّاسُ يَومَ القِيَامَةِ حَتَّى يَذْهَبَ عَرَقُهُمْ في الأرضِ سَبْعِينَ ذِراعاً ØŒ وَيُلْجِمُهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ     آذَانَهُمْ )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
ومعنى (( يَذْهَبُ في الأرضِ )) : ينـزل ويغوص .

৪০৩ । আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের এত ঘাম বেরুবে যে, তা জমীনে সত্তর গজ উঁচু হয়ে বইতে থাকবে এবং তাদেরকে ঘামের লাগাম পরানো হবে, এমনকি তা তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।
_____________________________
[أخرجه : البخاري 8/138 ( 6532 ) ، ومسلم 8/158 ( 2863 ) ( 61 )]
[বুখারী: 8/38 ( 6532 ), মুসলিম: 8/158 ( 2863 )]

404- وعنه ، قَالَ : كُنَّا مَعَ رَسُول الله ﷺ إذْ سمع وجبة(1) ، فَقَالَ : (( هَلْ تَدْرُونَ مَا هَذَا ؟ )) قُلْنَا : الله وَرَسُولُهُ أعْلَمُ . قَالَ : (( هذَا حَجَرٌ رُمِيَ بِهِ في النَّارِ مُنْذُ سَبْعينَ خَريفاً ، فَهُوَ يَهْوِي في النَّارِ الآنَ حَتَّى انْتَهَى إِلَى قَعْرِها فَسَمِعْتُمْ وَجْبَتَهَا )) رواه مسلم .

৪০৪ । আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামএর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি কোন বস্তুর গড়িয়ে পড়ার শব্দ শুনতে পেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ এটা কিসের শব্দ তা কি তোমরা  জানো? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেনঃ এটা একটি পাথর যা সত্তর বছর পূর্বে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। অদ্যাবদি তা জাহান্নামেই গড়াচ্ছিল এবং এখন গিয়ে তার  গর্তে পতিত হয়েছে।তোমরা এর পতনের শব্দই শুনতে পেলে। (ইমাম মুসলিম এ হাদীস উদ্ধৃত করেছেন।)
_____________________________
[أخرجه : مسلم 8/150 ( 2844 )]
[মুসলিম: 8/150 ( 2844 )]
[1- قال النووي في شرح صحيح مسلم 9/154 عقيب ( 2845 ) : (( معناها السّقطة ))]
[১. ইমাম নওয়াবী @]

405- وعن عدي بن حاتم  ، قَالَ : قَالَ رَسُول الله ﷺ : (( مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وبَيْنَهُ تَرْجُمَانٌ ، فَيَنْظُرُ أيْمَنَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إلاَّ مَا قَدَّمَ ، وَيَنْظُرُ أشْأَمَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إلاَّ مَا قَدَّمَ ، وَيَنْظُرُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَلاَ يَرَى إلاَّ النَّارَ تِلْقَاءَ وَجْهِهِ ، فَاتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .

৪০৫ । আদী ইবনে হাতেম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের  সাথে তার রব কথা বলবেন। তার ও আল্লাহর মধ্যে কোন দোভাষী থাকবে না। সে তার ডাইনে তাকিয়ে তার পূর্বে পাঠানো আমল ছাড়া আর কিছুই দেখবে না এবং বাঁয়ে তাকিয়ে ও তার পূর্বে পাঠানো আমল ছাড়া আর কিছুই দেখবে না, আর সামনে তাকিয়ে তার চোখের সামনে জাহান্নাম ছাড়া কিছুই দেখতে পাবে না। তাই তোমরা এক টুকরা খেজুরের বিনিময়ে হলেও জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা করো। (ইমাম বুখারী ও মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। )
_____________________________
[انظر الحديث ( 139 )]
[দেখুন হাদীস নং ( 139 )]

406- وعن أَبي ذر  ØŒ قَالَ : قَالَ رَسُول الله ï·º : (( إنِّي أَرَى مَا لا    تَرَوْنَ ØŒ أطَّتِ السَّمَاءُ وَحُقَّ لَهَا أنْ تَئِطَّ ØŒ مَا فِيهَا مَوضِعُ أرْبَع أصَابعَ إلاَّ ÙˆÙŽÙ…ÙŽÙ„ÙŽÙƒÙŒ وَاضِعٌ جَبْهَتَهُ سَاجِداً للهِ تَعَالَى . والله لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أعْلَمُ ØŒ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيراً ØŒ وَمَا تَلَذَّذْتُمْ بالنِّساءِ عَلَى الفُرُشِ ØŒ وَلَخَرَجْتُمْ إِلَى الصُّعُدَاتِ تَجْأرُونَ إِلَى اللهِ تَعَالَى )) رواه الترمذي ØŒ وَقالَ : (( حديث حسن )) .
وَ(( أطَّت )) بفتح الهمزة وتشديد الطاءِ و(( تئط )) بفتح التاءِ وبعدها همزة مكسورة ، وَالأطيط : صوتُ الرَّحْلِ وَالقَتَبِ وَشِبْهِهِمَا ، ومعناه : أنَّ كَثرَةَ مَنْ في السَّماءِ مِنَ المَلائِكَةِ العَابِدِينَ قَدْ أثْقَلَتْهَا حَتَّى أطّتْ . وَ(( الصُّعُدات )) بضم الصاد والعين : الطُّرُقات : ومعنى : (( تَجأَرُون )) : تَستَغيثُونَ .

৪০৬ । আবূ যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যা দেখতে পাচ্ছি, তোমরা তা দেখতে পাচ্ছো না। আকাশ উচ্চঃস্বরে শব্দ করছে, আর এর উচ্চ স্বরে শব্দ করার অধিকার আছে। কেননা তাতে চার আঙ্গুল পরিমাণ জায়গাও খালি নেই, বরং ফেরেশতারা তাতে আল্লাহর জন্য সিজদায় তাদের কপাল ঠেকিয়ে রেখেছেন। আল্লাহর শপথ! আমি যা জানি, যদি তোমরা তা জানতে পারতে, তাহলে তোমরা অবশ্যই হাসতে কম কাঁদতে বেশি; আর তোমরা স্ত্রীদের সাথে বিছানায় শুয়ে আমোদ-আহলাদও করতে না এবং মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার জন্য বনে-জঙ্গলে বেরিয়ে যেতে। (ইমাম তিরমিযী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এ হাদীসটি হাসান। )
_____________________________
[أخرجه : ابن ماجه ( 4190 ) ، والترمذي ( 2312 ) وقال : (( حديث حسن غريب ))]
[ইবনে মাজাহ্: ( 4190 ), তিরিমিযী: ( 2312 ) তিরমিযী বলেন: হাদীসটি হাসান গরীব।]

407- وعن أَبي برزة - براء ثُمَّ زاي - نَضْلَة بن عبيد الأسلمي  ، قَالَ : قَالَ رَسُول الله ﷺ : (( لا تَزُولُ قَدَمَا عَبْدٍ يَومَ القِيَامَةِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أفنَاهُ ؟ وَعَنْ عِلمِهِ فِيمَ فَعَلَ فِيهِ ؟ وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أيْنَ اكْتَسَبَهُ ؟ وَفيمَ أنْفَقَهُ ؟ وَعَنْ جِسمِهِ فِيمَ أبلاهُ ؟ )) [رواه الترمذي: 2417 ، وَقالَ : (( حديث حسن صحيح ))] .

৪০৭ । আবূ বারযা নাদলা ইবনে উবায়েদ আসলামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের  দিন (হাশরের ময়দানে) বান্দাহ তার স্থানেই দাঁড়িয়ে থাকবে, যে পর্যন্ত না তাকে জিজ্ঞেস করা  হবেঃ তার জীবনকাল কিরূপে অতিবাহিত করেছে, তার জ্ঞান কি কাজে লাগিয়েছে, তার সম্পদ কোথা থেকে অর্জন করেছে এবং কিসে খরচ করেছে এবং তার শরীর কিভাবে পুরানো করেছে? (ইমাম তিরমিযী এ হাদীস বর্ণনা করে বলেন, হাদীস টি হাসান ও সহীহ।)
_____________________________
[رواه الترمذي: 2417 ، وَقالَ : (( حديث حسن صحيح ))]
[তিরমিযী: ( 2417 ) তিরমিযী বলেন: হাদীসটি হাসান সহীহ্।]

408- وعن أَبي هريرة  ØŒ قَالَ : قرأ رَسُول الله ï·º :  يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا  [ الزلزلة : 4 ] ثُمَّ قَالَ : (( أتَدْرونَ مَا أخْبَارهَا )) ØŸ قالوا : الله وَرَسُولُهُ أعْلَمُ . قَالَ : (( فإنَّ أخْبَارَهَا أنْ تَشْهَدَ عَلَى كُلّ عَبْدٍ أَوْ أمَةٍ بما عَمِلَ عَلَى ظَهْرِهَا تَقُولُ : عَملْتَ كَذَا وكَذَا في يَومِ كَذَا وكَذَا فَهذِهِ أخْبَارُهَا )) رواه الترمذي ØŒ  وَقالَ : (( حديث حسن صحيح )) .

৪০৮ । আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “সেদিন তা(যমীন) তার সমস্ত বিষয় বর্ণনা করবে” (সূরা যিলযালঃ ৪)। অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কি জানো সেদিন জমীন কি বর্ণনা করবে? উপস্থিত সবাই বললেনঃ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেনঃ যমীন যে বিষয় বর্ণনা করবে তা এই যে, তার উপরে নর-নারী কি কি করেছে সে সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়ে বলবে, তুমি এই দিন এই এই কাজ করেছ। এগুলো হলো তার বর্ণনা। [ইমাম তিরমিযী হাদীসটি উদ্ধৃত করে বলেন, এটি হাসান ও সহীহ হাদীস।]
_____________________________
[أخرجه : الترمذي ( 2429 ) ، والنسائي في " الكبرى " ( 11693 ) وقال الترمذي عنه : (( حديث حسن غريب صحيح )) على أنَّ سند الحديث ضعيف]
[তিরমিযী: ( 2429 ), নাসায়ী আলকোবরা: ( 11693 ) এবং তিরমিযী এ হাদীসটি সম্পর্কে বলেন: হাদীসটি হাসান গরীব সহীহ্ @]

409- وعن أَبي سعيد الخدري ، قَالَ : قَالَ رَسُول الله ﷺ : (( كَيْفَ أنْعَمُ! وَصَاحِبُ القَرْنِ قَدِ التَقَمَ القَرْنَ ، وَاسْتَمَعَ الإذْنَ مَتَى يُؤمَرُ بالنَّفْخِ فَيَنْفُخُ )) فَكَأنَّ ذلِكَ ثَقُلَ عَلَى أصْحَابِ رسولِ الله ﷺ فَقَالَ لَهُمْ : (( قُولُوا : حَسْبُنَا الله وَنِعْمَ الوَكِيلُ )) رواه الترمذي ، وَقالَ : (( حديث حسنٌ )) .
(( القَرْنُ )) : هُوَ الصُّورُ الَّذِي قَالَ الله تَعَالَى :  وَنُفِخَ في الصُّورِ (1) كذا فسَّره رَسُول الله ﷺ .

৪০৯ । আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেনঃ আমি কিভাবে নিশ্চিন্ত বসে থাকতে পারি? অথচ শিঙ্গাধারী ফেরেশতা (ইসরাফীল ) মুখে শিঙ্গা লাগিয়ে কান খুলে অপেক্ষা করছেন কখন তাকে ফুঁ দেয়ার  আদেশ করা হবে, আর তিনি তাতে ফুঁ দিবেন? মনে হলো যেন একথায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাহাবীগণ সন্ত্রস্ত ও আতঙ্কিত হলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা বলো, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ঠ এবং তিনি খুবই উত্তম অভিভাবক। (ইমাম তিরমিযী এটি বর্ণনা করে বলেন, হাদীসটি হাসান।
_____________________________
[أخرجه : الترمذي ( 2431 )]
[তিরমিযী: ( 2431 )]
[1- سورة الكهف : 99]
[১. আয়াতাংশ সূরা আল কাহাফ: 99 নং আয়াত থেকে]

410- وعن أَبي هريرة ، قَالَ : قَالَ رَسُول الله ﷺ : (( مَنْ خَافَ أدْلَجَ ، وَمَنْ أدْلَجَ بَلَغَ المَنْزِلَ . ألا إنَّ سِلْعَةَ اللهِ غَالِيَةٌ ، ألاَ إنَّ سِلْعَةَ الله الجَنَّةُ )) رواه الترمذي ، وَقالَ : (( حديث حسن )) .
وَ(( أدْلَجَ )) : بإسكان الدال ومعناه سار من أول الليلِ . والمراد التشمير في الطاعة ، والله أعلم .

৪১০ । আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহঃসাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (শেষ রাতে শত্রুও লুটতরাজ কে) ভয় করে, সে সন্ধ্যা রাতেই রওয়ানা হয় এবং যে ব্যক্তি সন্ধ্যা রাতেই রওয়ানা হয়, সে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারে। জেনে রাখো, আল্লাহর সামগ্রী খুবই মূল্যবান। জেনো রাখো, আল্লাহর সামগ্রী হলো জান্নাত। (ইমাম তিরমিযী হাদীসটি উদ্ধৃত করে বলেন, এটি হাসান হাদীস। )
_____________________________
[أخرجه : الترمذي ( 2450 ) وقال : (( حديث حسن غريب ))]
[তিরমিযী: ( 2450 ) তিনি বলেন: হাদীসটি হাসান গরীব।]

411- وعن عائشة رضي الله عنها ، قَالَتْ : سَمِعْتُ رَسُول الله ﷺ ، يقول : (( يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ القِيَامَةِ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلاً )) قُلْتُ : يَا رَسُول الله ، الرِّجَالُ وَالنِّساءُ جَمِيعاً يَنْظُرُ بَعضُهُمْ إِلَى بَعْض ؟! قَالَ : (( يَا عائِشَةُ ، الأمرُ أشَدُّ مِنْ أنْ يُهِمَّهُمْ ذلِكَ )) .
وفي رواية : (( الأَمْرُ أهمُّ مِنْ أنْ يَنْظُرَ بَعضُهُمْ إِلَى بَعض )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
(( غُرلاً )) بِضَمِّ الغَينِ المعجمة ، أيْ : غَيرَ مَختُونينَ .

৪১১ । হযরত আইশা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ কিয়ামতের দিন লোকদের খালি পায়ে, উলঙ্গ শরীরে এবং খাতনাহীন অবস্থায় সমবেত করা হবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম,ইয়া রাসূলুল্লাহ! সমস্ত নারী-পুরুষ একসাথে হলে তো তারা একে অপরকে দেখবে? তিনি বলেনঃ হে আইশা! মানুষ যা কল্পনা করে সেদিনের পরিস্থিতি তার চাইতেও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। অপর এক বর্ণনায় আছে, মানুষ একে অপরের দিকে তাকানোর চাইতেও সেদিনের অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে। (ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
_____________________________
[أخرجه : البخاري 8/136 ( 6527 ) ، ومسلم 8/156 ( 2859 ) ( 56 )]
[বুখারী: 8/136 ( 6527 ), মুসলিম: 8/156 ( 2857 ) ( 56 )]

 

{নিয়মিত আপডেট হচ্ছে, অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। -কতৃপক্ষ}

সর্বশেষ আপডেট ( Friday, 19 June 2009 )