আমাদের টাইপ করা বইগুলোতে বানান ভুল রয়ে গিয়েছে প্রচুর। আমরা ভুলগুলো ঠিক
করার চেষ্টা করছি ক্রমাগত। ভুল শুধরানো এবং টাইপ সেটিং জড়িত কাজে সহায়তা
করতে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে।
<< সূরা তালিকাআত তাকবীর
ভূমিকা (নামকরণ, শানে নুযূল, পটভূমি ও বিষয়বস্তুর জন্য ক্লিক করুন)
নামকরণ
সূরার প্রথম বাক্যের ( আরবী ----------------) শব্দটি থেকে নামকরণ করা হয়েছে। তাকভীর ( আরবী ) হচ্ছে মূল শব্দ। তা থেকে অতীত কালের কর্তৃবাচ্য অর্থে কুওভিরাত ( আরবী ) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর মানে হচ্ছে , গুটিয়ে ফেলা হয়েছে । এই নামকরণের অর্থ হচ্ছে , এটি সেই সূরা যার মধ্যে গুটিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে।
নাযিলের সময় -কাল
বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভংগী থেকে পরিস্কারভাবে জানা যায় , এটি মক্কা মু’আযযমার প্রথম যুগের নাযিল হওয়া সূরাগুলোর অন্তরভুক্ত।
বিষয়বস্তু ও মুল বক্তব্য
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে দু’টি : আখেরাত ও রিসালাত।
প্রথম ছ’টি আয়াতে কিয়ামতের প্রথম পর্বের উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে : যখন সূর্য আলোহীন হয়ে পড়বে। তারকারা স্থানচ্যুত হয়ে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত হবে । পাহাড়গুলো পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে উৎপাদিত হয়ে শূন্যে উড়তে থাকবে। মানুষ তাদের সবচেয়ে প্রিয় জিনিসের কথা ভুলে যাবে। বনের পশুরা আতংকিত ও দিশেহারা হয়ে সব এক জায়গায় জড়ো হয়ে যাবে। সমুদ্র স্ফীত হবে ও জ্বলে উঠবে। পরবর্তী সাতটি আয়াতে কিয়ামতের দ্বিতীয় পর্বের উল্লেখ করে বলা হয়েছে : যখন রূহগুলোকে আবার নতুন করে শরীরের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হবে। আমলনামা খুলে দেয়া হবে। অপরাধের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আকাশের সমস্ত পরদা সরে যাবে। এবং জান্নাত - জাহান্নাম ইত্যাদি সব জিনিসই চোখের সামনে সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে । আখেরাতের এই ধরনের একটি পুরোপুরি ছবি আঁকার পর একথা বলে মানুষকে চিন্তা করার জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে যে , সে সময় প্রত্যেক ব্যক্তি কি পাথেয় সংগ্রহ করে এনেছে তা সে নিজেই জানতে পারবে।
এরপর রিসালাত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে এ ক্ষেত্রে মক্কাবাসীদেরকে বলা হয়েছে , মুহাম্ম্দ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের সামনে যা কিছু পেশ করছেন সেগুলো কোন পাগলের প্রলাপ নয়। কোন শয়তানের ওয়াসওয়াসা ও বিভ্রান্তিও নয় । বরং সেগুলো আল্লাহর প্রেরিত একজন উন্নত মর্যাদা সম্পন্ন বুযর্গ ও বিশ্বস্ত বাণীবাহকের বিবৃতি , যাঁকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উন্মুক্ত আকাশের দিগন্তে দিনের উজ্জ্বল আলোয় নিজের চোখে দেখেছেন । এই শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তোমরা কোন দিকে চলে যাচ্ছো?
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ﴾ ১) যখন সূর্য গুটিয়ে নেয়া হবে৷১  
﴿وَإِذَا النُّجُومُ انكَدَرَتْ﴾ ২) যখন তারকারা চারদিকে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে৷ ২  
﴿وَإِذَا الْجِبَالُ سُيِّرَتْ﴾ ৩) যখন পাহাড়গুলোকে চলমান করা হবে৷৩  
﴿وَإِذَا الْعِشَارُ عُطِّلَتْ﴾ ৪) যখন দশ মাসের গর্ভবতী উটনীগুলোকে তাদের অবস্থার ওপর ছেড়ে দেয়া হবে৷ ৪  
﴿وَإِذَا الْوُحُوشُ حُشِرَتْ﴾ ৫) যখন বন্য পশুদের চারদিকে থেকে এনে একত্র করা হবে৷৫ 
﴿وَإِذَا الْبِحَارُ سُجِّرَتْ﴾ ৬) যখন সমুদ্রগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হবে৷ ৬  
﴿وَإِذَا النُّفُوسُ زُوِّجَتْ﴾ ৭) যখন প্রাণসমূয়হকে ৭  ( দেহের সাথে ) জুড়ে দেয়া হবে৷ ৮  
﴿وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ﴾ ৮) যখন জীবিত পুঁতে ফেলা মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হবে ,  
﴿بِأَيِّ ذَنبٍ قُتِلَتْ﴾ ৯) কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে ? ৯  
﴿وَإِذَا الصُّحُفُ نُشِرَتْ﴾ ১০) যখন আমলনামাসহ খুলে ধরা হবে৷  
﴿وَإِذَا السَّمَاءُ كُشِطَتْ﴾ ১১) যখন আকাশের পরদা সরিয়ে ফেলা হবে৷ ১০  
﴿وَإِذَا الْجَحِيمُ سُعِّرَتْ﴾ ১২) যখন জাহান্নামের আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হবে  
﴿وَإِذَا الْجَنَّةُ أُزْلِفَتْ﴾ ১৩) এবং জান্নাতকে নিকটে আনা হবে৷১১  
﴿عَلِمَتْ نَفْسٌ مَّا أَحْضَرَتْ﴾ ১৪) সে সময় প্রত্যেক ব্যক্তি জনতে পারবে সে কি নিয়ে এসেছে৷ কাজেই , না , ১২  
﴿فَلَا أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ﴾ ১৫) আমি কসম খাচ্ছি পেছনে ফিরে আসা  
﴿الْجَوَارِ الْكُنَّسِ﴾ ১৬) ও অদৃশ্য হয়ে যাওয়া তারকারাজির এবং রাত্রির ,  
﴿وَاللَّيْلِ إِذَا عَسْعَسَ﴾ ১৭) যখন তা বিদায় নিয়েছে  
﴿وَالصُّبْحِ إِذَا تَنَفَّسَ﴾ ১৮) এবং প্রভাতের , যখন তা শ্বাস ফেলেছে৷ ১৩  
﴿إِنَّهُ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ﴾ ১৯) এটি প্রকৃতপক্ষে একজন সম্মানিত বাণীবাহকের বাণী ,১৪ 
﴿ذِي قُوَّةٍ عِندَ ذِي الْعَرْشِ مَكِينٍ﴾ ২০) যিনি বড়ই শক্তিধর ,১৫  আরশের মালিকের কাছে উন্নত মর্যাদার অধিকারী ,  
﴿مُّطَاعٍ ثَمَّ أَمِينٍ﴾ ২১) সেখানে তার হুকুম মেনে চলা হয় , ১৬  তিনি আস্থাভাজন ৷ ১৭  
﴿وَمَا صَاحِبُكُم بِمَجْنُونٍ﴾ ২২) আর ( হে মক্কাবাসীরা ! ) তোমাদের সাথী ১৮ পাগল নয়৷  
﴿وَلَقَدْ رَآهُ بِالْأُفُقِ الْمُبِينِ﴾ ২৩) সেই বাণীবাহককে দেখেছে উজ্জ্বল দিগন্তে ৷১৯ 
﴿وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِينٍ﴾ ২৪) আর সে গায়েবের ( এই জ্ঞান লোকদের কাছে পৌঁছানেরা ) ব্যাপারে কৃপণ নয়৷২০  
﴿وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَيْطَانٍ رَّجِيمٍ﴾ ২৫) এটা কোন অভিশপ্ত শয়তানের বাক্য নয়৷ ২১  
﴿فَأَيْنَ تَذْهَبُونَ﴾ ২৬) কাজেই তোমরা কোথায় চলে যাচ্ছো ?  
﴿إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ﴾ ২৭) এটা তো সারা জাহানের অধিবাসীদের জন্য একটা উপদেশ ৷  
﴿لِمَن شَاءَ مِنكُمْ أَن يَسْتَقِيمَ﴾ ২৮) তোমাদের মধ্য থেকে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য , যে সত্য সরল পথে চলতে চায়৷ ২২  
﴿وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ﴾ ২৯) আর তোমাদের চাইলেই কিছু হয় না , যতক্ষণ না আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা চান৷২৩  
|